নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-
একনেকের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী ‘আর্চ স্টিল সেতু’ নির্মাণের দাবি জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন নাগরিক সংগঠদের নেতারা এ দাবি জানান। ‘সদাজাগ্রত ময়মনসিংহ’ নামক একটি নাগরিক সংগঠন এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন- একনেকে অনুমোদিত নকশা পরিবর্তন করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র নদে নির্মাণাধীন কেওয়াটখালী ‘আর্চ স্টিল সেতু’ প্রকল্পের সংযোগ সড়ক। এর ফলে বাড়তি ভূমি অধিগ্রহণের কারণে বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসতভিটা উচ্ছেদসহ কৃষিজমি, খাল ও জলাশয় ভরাট করতে হবে। এতে, প্রাণপ্রকৃতি বিপর্যয়ের শঙ্কা তৈরি হবে।
লিখিত বক্তব্যে সদাজাগ্রত ময়মনসিংহের প্রধান সংগঠক আবুল কালাম আল আজাদ বলেন- মূল নকশা পরিবর্তন করে নগরীর শম্ভুগঞ্জ চায়না মোড়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিটার বাঁকা ইংরেজি ইউ আকৃতির একটি সড়কের নির্মাণকাজ চলছে। অস্বাভাবিক বাঁকা এ সড়ক গিয়ে মিশেছে পুরোনো চায়না সেতুর সংযোগ সড়কে। দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক এক হওয়ায় পুরো ময়মনসিংহ নগরী ও আশপাশের এলাকা যানজটে স্থবির হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আবুল কালাম আল আজাদ আরও বলেন- একনেকের নকশার বাইরে গিয়ে অস্বাভাবিক বাঁকানো অংশ নির্মাণ করতে একটি খাল, সাতটি জলাশয়, কৃষিজমি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, ৬৫টি কবর, দোকান ও কারখানা ভরাট আর উচ্ছেদ করতে হচ্ছে। এ জন্য অতিরিক্ত ৩২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে। ৩০ ফুট উঁচু প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে হচ্ছে। রেল ও সড়ক ওভারপাস নির্মাণ করতে হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে আরও দুটি সেতু নির্মাণ করা সম্ভব। এর পেছনে আছে কয়েকটি আবাসন প্রকল্পসহ ‘সরকারি-বেসরকারি দুষ্টচক্র’ যাদের কারসাজিতে স্বপ্নের এই প্রকল্প দুঃস্বপ্নে রূপান্তরিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন আবুল কালাম আল আজাদ।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী আর্চ স্টিল সেতু নির্মাণে একনেকের অনুমোদিত নকশা বিপর্যয়ের বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
এ সময় বক্তব্য দেন- গাছরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব, রাজধানীর তেঁতুলতলা মাঠরক্ষা আন্দোলনের নেত্রী সৈয়দা রতœা, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম-সম্পাদক হালিম দাদ খান, সদাজাগ্রত ময়মনসিংহের সমন্বয়ক মজিবুর রহমান।
ময়মনসিংহ স্ট্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট প্যানেলের আওতায় ২০১৪ সালে নগরীর কেওয়াটখালী এলাকায় একই সঙ্গে সড়ক ও রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ২০২১ সালের ২৩ আগষ্ট একনেকে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে, ওই নকশায় রেলপথ যুক্ত করা হয়নি।